elementer444
কেন মানুষ চাকরী পায় না আর কেন আপনি নিশ্চিতভাবে চাকরী পাবেন ।
প্রথমত নিশ্চয়তা দিচ্ছি এই লিখাটা পড়ার পর কোন মামা-চাচা-টাকা ছাড়াই আপনি চাকরী পাবেন ।
শুরু করছি । আমাদের দেশে একটা উদ্ভট রেওয়াজ আছে ছেলেরা পড়াশুনা শেষ করে চাকরী খুঁজে ! আরে এটাইতে স্বাভাবিক । এত পড়াশুনা করে চাকরী করব না ?
জ্বি অবশ্যই চাকরী করবেন । কিন্তু চাকরীর জন্য আপনার প্রস্তুতি কি ?
উত্তর হল আমি খুব ভালভাবে পড়ুশুনা করেছি, জি.পি. এ ৫ পেয়েছি, ফাষ্ট ক্লাস ফাষ্ট হয়েছি ইত্যাদি ইত্যাদি । তো এখন তো আমি একটা ভাল চাকরী পেতেই পারি ।
অবশ্যই পেতে পারেন । কিন্তু আপনাকে নিয়ে কোন কোম্পানীর কি লাভ হবে ? আপনার এত ভাল রেজাল্ট দিয়ে কোম্পানী কি করবে ? তার দরকার প্র্যাকটিক্যাল কাজ , স্কীল ।
এখানেই আমদের দেশের শিক্ষিত ছেলে-মেয়েরা ভুল করে । শুধুমাত্র একাডেমিক পড়াশুনা এবং সার্টিফিকেটক থাকলেই নিজেকে চাকরী করার যোগ্য মনে করে ।
চাকরী পেতে
একাডেমিক পড়াশুনার গুরুত্ব ৫০%
আর দক্ষতার গুরুত্ব ৫০% ।
যদি আমি এই দুটিকে দুইটি সাবজেক্ট মনে করি তাহলে একটিতে যদি আপনি ফুল মার্কস পান এবং আরেকটাতে ফেল করেন তাহলে আপনি আলটিমেটলি ফেল ।
তো এখন কি করতে হবে ?
প্রথমত পড়াশুন শেষ করেই নিজেকে চাকরীর জন্য যোগ্য মনে করা যাবে না । পড়াশুনা চলাকালীন বা শেষ করে অবশ্যই আপনাকে স্কীল বা দক্ষতা অর্জন করতে হবে । যখন আপনি নিশ্চিত হবেন যে আপনি যে কোন একটা সেক্টরে বা আপনার পছন্দের সেক্টরে কাজ করার প্রয়োজনীয় স্কীল অর্জন করতে পেরেছেন তারপর কোমড় বেঁধে চাকরীতে এপ্লাই করুন । আপনার চাকরী পাওয়া কেউ ঠেকাতে পারবে ।
এবং আপাকে এন্ট্রি লেভেলের চাকরীতে এপ্লাই করতে হবে না । আপনি একদম শুরু থেকেই মিড লেভেল পজিশনে এপ্লাই করতে পারবে ।
তো কিভাবে স্কীল অর্জন করব :
১. মনে করুন আপনি একাউন্টিং এ পড়েন বা পড়াশুন শেষ করেছেন । ( আমি জাষ্ট বুঝার জন্য একাউন্টিং নিয়ে এক্সজাম্পল দিচ্ছি কিন্তু এটা যে কোন সেক্টরের জন্য প্রযোয্য )
এখন প্রথমত আপনি সুর্নির্দিষ্টভাবে টার্গেট করুন আপনি কোন সেক্টরে আপনি একাউন্টিং জব করতে চান । ধরে নিলাম যে আপনি বড় কোন মাল্টিন্যাশনাল কোম্পানীতে জব করতে চান যেমন : ইউনিলিভার ।
২. এখন এই মাল্টিন্যাশনাল কোম্পানীতে কিভাবে একাউন্টিং হয় সেটা গুগুল, ইউটিউবে সার্চ করে দেখুন, শিখুন, নোট করুন ।
৩. সরাসরি বা অনলাইনে তাদের কিছু ফাইল সংগ্রহ করে স্টডি করুন । আসলে কোন পদ্ধতিতে বা কিভাবে তারা কাজ করে ।
৩. এই সংক্রান্ত অনলাইনে বা অফলাইনে কোথায় ফ্রি সেমিনার বা পেইড সেমিনার হয় খুুঁজুন , করুন ।
৩. লিংকড ইন এ সেই সকল কোম্পানীর উচ্চ পদস্ত ব্যাক্তিদের পাবেন তাদের সাথে কানেকশন তৈরী করুন । তাছাড়া লিংকড ইনে এই রকম বড় বড় বিদেশী কোম্পানীর কর্মকর্তাদের পাবেন । তাদের সাথে বন্ধুত্ব তৈরী করুন । ( এত সহজ ? আসলেই সহজ, বড় কর্মকর্তারা কাজ পাগল মানুষ, কাজ নিয়ে যদি গঠনমূলক কথা বলেন খুব সহজেই বন্ধুত্ব হয়ে যাবে ।
৪. কমপক্ষে একমাস বিনামূল্যে সেই সব প্রতিষ্ঠানে কাজ করার সুযোগ খুঁজুন ।
৫. তাদের কোম্পানী, ম্যানেজমেন্ট, হিষ্টোরি, বিজনেস পলিসি, স্ট্রেটেজি মোটো, ইত্যাদি সম্পর্কে গভীরভাবে জানুন । অনুধাবন করুন, একাত্ন হোন, ধারণ করুন ।
৬. কখন তাদের জব সার্কুলার হবে সেজন্য অপেক্ষা না করে তাদের ওয়েব সাইটে সি.ভি ড্রপ করুন এবং নিয়মিত তাদের মেইলে মেইল করুন।
৭. সি.ভি এর উপরে একটি চিঠি লিখবেন যে : আপনি যদি এই কোম্পানীতে চাকরী পান তবে কিভবে আপনি এই কোম্পানীকে ইমপ্রুভ করতে পারবেন । এখানে কোথায় কোথায় লেকিংস আছে, কি কি প্রবলেম আছে এবং আপনি কিভাবে সেগুলো সলভ করতে পারবেন ।
৮. আপনি এর মধ্যে যা যা স্টাডি করেছেন যেগুলো খুব গুছিয়ে ফাইল তৈরী করে দিন । তারা যেন বুঝতে পারে যে আপনি শুধু টাকার জন্য চাকরী খুঁজছেন না । আপনি কাজপগল একজন মানুষ ।
৮. একটি ইমোশন্যাল টিঠি লিখতে পারেন যে কিভাবে ছোটবেলা থেকে আপনি স্বপ্ন দেখেছেন এই কোম্পানীতে চাকরী করবেন এবং এজন্য আপানর কঠিন ও কষ্টকর জার্নি । লজিক্যাল এবং ইমোশনাল দুইদিকেই হিট করুন । কাজ হবেই হবে ।
এই রকম আপনি জাষ্ট ১০ টি কোম্পানীকে টার্গেট করুন । নিশ্চিতভাবেই চাকরী হবে ।
আসলে চাকরী প্রার্থীরা চাকরীদাতাদের সাইকোলজী বুঝে না । এই করণেই চাকরী পাই না । আপনার রেজাল্ট যাই হোক আপনি যদি উপরের পদ্ধতিগুলো এপ্লাই কররেন নিশ্চিতভবে ভাল বেতনে, ভাল পজিশনে চাকরী পাবেন ।
আর বড় কোন কোম্পানী কখনো ভাল রেজাল্ট হতে হবে এমন শর্ত দেয় না । এমনকি আপনার অনেক বড় ডিগ্রী থাকতে হবে সেটা শর্ত দেয় না । শর্ত একটাই নিজের কাজকে ভালবাসতে হবে, কোম্পানীকে ভালবাসতে হবে, হেডেক নিতে হবে, ইনোভেটিভ হতে হবে এবং কোম্পানীর লক্ষ ও আদর্শের সাথে একাত্ন হতে হবে ।
এখন কথা হল একটা চাকরীর জন্য এত কষ্ট করব ? যদি না হয় । একটাতে না হলে আরেকটাতে হবে । আপনার চেয়ারটি অপেক্ষা করছে কিন্তু সে এখনই আপনাকে বসতে দিবে না । আপনাকে আগে পুড়ে পুড়ে খাঁটি সোনা হতে হবে ।
ধন্যবাদ
লেখক: মো: জামাল উদ্দিন ।
ফাউন্ডার, আউটসোর্সিং ইন্সটিটিউট
ব্লগ লিংক: https://www.outsourcinghelp.net/blog/

